Select Page

তোর ‘আশিকী’ পাগল করেছে আমায়

তোর ‘আশিকী’ পাগল করেছে আমায়

11845139_507501066066695_7920050519092411353_oবুধবার সন্ধ্যা ৬টার শো। সপ্তাহের শেষই বলা যায়। মধুমিতা হলে দেখলাম ‘আশিকী’। ডিসিতে দুই-একটা সিট খালি ছিল। কাহিনী লোকজনের জানা তারপরও মজা পাচ্ছিল। একটা জিনিস বুঝি না— টাকা খরচ করে এ সব মামুলি কাহিনীর কপিরাইটস কেনার মানে কী! কলকাতার লোকদের মাথা কি এতই পচে গেছে। তারা এখন তামিলেরটা কিনে খায়। ফলে তাদের লোক বেকার। আর এ বেকার লোকগুলো ঢুকছে যৌথ প্রযোজনায়। তারপর বাংলাদেশের বেকার লোকগুলো…। জটিল চেইন।

বড় বাজেট বললেও বাজেট মনে হয় ‘অগ্নি টু’র চে কম ছিল। অথবা ব্রিটেনে আসা-যাওয়া বা থাকায় খরচ হইছে সব। এটা ঠাট্টা করলাম। আসলেই লোকেশনে চমৎকারিত্ব ছিল না। কিন্তু অল্প আয়োজনে-অল্প মানুষে এখনকার মানুষ খাই-তেমন সিনেমা দারুণভাব ম্যানেজ করছে বলতেই হবে। এটা থেকে শেখার আছে আমাদের। গড়পরতা কলকাতার সিনেমায় এর চে বেশি আয়োজন থাকে। তারপরও ফর্মুলা মাফিক সুন্দর হইছে। এটা হলো গোছানো একটা ইন্ডাস্ট্রির প্লাস পয়েন্ট।

এ ধরনের একটা সিনেমায় বাঙ্গালী সংস্কৃতি আশা করা বড় বেশি ন্যাকামী। সে ন্যাকামী না থাকায় স্মার্টনেস। বরং একটা বিষয় মজা লাগছে। যেমন, ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ সিনেমায় নায়িকা পরপুরুষের সঙ্গে মদ খাইয়া রাতভর রংঢং করে। সকালে বলে, ‘হায় হায় এ কি করলা’। নায়ক বলে, ‘ইন্ডিয়ান পোলারা দেশী মেয়েদের ইজ্জত নষ্ট করে না। তুমি ঠিকঠাক আছো’। এটা একটা প্যাথেটিক দিক। এ সিনেমায়্ও মদ আর রংঢং আছে। বাট দেশপ্রেমের সে ন্যাকামী নাই। শরীর নিয়াই শূচিবাই আছে। যা মন দিয়ে সলভ হয়! যদিও ব্যাপারটা ভালো লাগে নাই। কিন্তু না লাগলেও আজকাল তো এমনই তো হয়।

তবে জাজ বাংলাদেশকে অবহেলা করছে মানতে হবে। অন্তত ডাবিং কইরা আলাদা বাংলাদেশী ভার্সন রাখতে পারত। নায়িকার বাবার হাতে আনন্দবাজার পত্রিকা না দেখাইয়া প্রথম আলো দেখাইতে পারত। এমনিতেই পুরো সিনেমায় ধর্ম প্রশ্নে বেশ সংশয় জারি ছিল। মনে হচ্ছিল হিন্দু ক্যারেক্টার। বাট ঘর-দোরে তা প্রকাশ পায় নাই। মা-বোনদের সিথিতে সিদুঁর ছিল না। সচেতন প্রয়াস। কলকাতার সিনেমায় ধর্ম মাস্ট। বাংলাদেশে হইলে তা পরিতাজ্য। ইন্টারেস্টিং। জানি না, কলকাতার ভার্সনে আলাদা কিছু আছে কি-না! না থাকলে, বলা যেতে পারে— ‘কূলহারা কলঙ্কিনী’। এ ব্যাপারটা কিন্তু ‘মনের মাঝে তুমি’ সিনেমায়ও ছিল।

অভিনয়। আসলে এ ধরনের সিনেমায় অভিনয় শিল্পীরা দ্রুত মুডটা ধরে ফেলতে পারে। তাই তেমন সমস্যা হয় নাই। আর বেশিরভাগ অভিনেতা, যারা এ সিনেমা করছেন— তারা এমন কাহিনী বহুত করছেন। যেহেতু বাংলাদেশী মানুষ আমি। এটা আমার কাছে নুসরাত ফারিয়ার সিনেমা। বলতে হয় অভিষেক সিনেমায় দারুণ করেছেন তিনি। গ্রুমিং সেশন ভাল ছিল বুঝা যাচ্ছে। আবারো দেখলাম, কম্পিউটার স্ক্রিনে দেখা গান ও অভিনয় সিনেমা হলে অন্যরকম লাগে।

 

55396_138

মোটের উপর আমার ভালো লাগছে। কারণ বিরক্ত হইতে দেয় না। এ মানের সিনেমা বছরে ১০টা হইলে গুড। (তবে নব্বই ভাগ ভারতীয় কাস্টিং বা ব্যাকগ্রাউন্ড আর্টিস্ট দিয়া না)। ৫টা ‘জিরো ডিগ্রি’ আর ৫টা ‘জালালের গল্প’। বেশ বেশ। আমি মনে করি মেইন স্ট্রিম স্ট্রং হলে অন্যধারার সিনেমাগুলো স্ট্রং হবে। ধীরে ধীরে রুচিরও চেঞ্জ হবে। এমনিতেই জাজের সিনেমার কারণে হলে দর্শক বাড়ছে। অনলাইনে শাকিব ভক্তদের চিল্লাচিল্লি দেখে মনে হয় তারা জাজের সিনেমা দেখে না। তাইলে জাজের সিনেমা হিট করার জন্য নতুন দর্শক হল আসছে। খারাপ না!

এবার ব্লগের শিরোনাম প্রসঙ্গে বলি। ‘তোর আশিকী পাগল করেছে আমায়’— এটা সিনেমাটির একটা গান। আশিকী আমাকে পাগল করে নাই। করার কিছু নাইও। ঠাট্টা করে এ শিরোনাম। আর ‘আশিকী’ মানে কী তা আমি জানি না। বাংলা সিনেমার হিন্দি নামের জন্য নিন্দা। অধিক অধিক হিন্দি ডায়ালগের জন্যও নিন্দা।

ওয়াহিদ সুজনের আরও লেখা :   ইচ্ছেশূন্য মানুষ । আমার লেখার খাতা


মন্তব্য করুন