উৎসর্গ হুমায়ূন ফরীদি

মানুষের মৃত্যু হলে তবুও মানব থেকে যায়
অতীতের থেকে উঠে এসে আজকের মানুষের কাছে
প্রথমত চেতনার পরিমাপ নিতে আসে
-মানুষের মৃত্যু হলে,জীবনানন্দ দাশ

কবি যা বলছেন তাতে একথা পরিষ্কার মৃত্যু সব মানুষের জীবনে এলেও কারো কারো জীবন এতটাই মহিমান্বিত হয়ে ওঠে যে মৃত্যু তাকে শুধু কেড়ে নিতে পারে যেখানে চোখের দেখাটা আর থাকে না কিন্তু মনের দেখাটা থাকে চিরদিন। একজন হুমায়ুন ফরীদি, কোথ্থেকে শুরু করব তাঁকে নিয়ে? ফরীদিকে নিয়ে বলতে গেলে কীভাবেই বা শুরু করতে হয় বোঝা মুশকিল। তারপরও শুরু করলাম নিজের মত করেই। খালি চোখে সামনাসামনি আমরা আর দেখতে পাই না প্রিয় অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদিকে। তিনি অসাধারণ,অপূর্ব। বিশ্বমানের অভিনেতা। তাঁকে হারিয়ে আমরা নিঃস্ব। আমরা কী হারিয়েছি তা টের পাই তাঁর মৃত্যুর পরেই। অবশ্য আমাদের দেশে এমনটা নতুনও নয়। আমরা আগে হারাই তারপর আফসোস করি এটাই আমাদের চিরদিনের অভ্যাস। Continue reading

গুড রিমেক ‘প্রেমী ও প্রেমী’

ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে জাজ মাল্টিমিডিয়ার এবার পরিবেশনা ছিল জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত এবং আরিফিন শুভনুসরাত ফারিয়া অভিনীত ‘প্রেমী ও প্রেমী’ সিনেমাটি। মূলত ট্রেলার প্রকাশের পর থেকেই সিনেমাটি নকলের অভিযোগে দুষ্ট ছিল।

সিনেমার কাহিনী একটি সরল প্রেমের গল্প, যেখানে প্রেমিকা ভালোবাসার মানুষকে নিজের মনের কথা বলার জন্য ৮ হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ভালোবাসার মানুষের কাছে যাওয়ার জন্য কলকাতার পথে রওনা দেয়। এরপর ঘটনাক্রমে আরিফিন শুভর সাথে দেখা হয়, তারপর এগুতে থাকে ঘটনাটি। Continue reading

মাহি কি জ্বলে উঠার আগেই নিভে গেল?

ক্যারিয়ার শুরু থেকেই যে বলতে হয়

২০১২

এই বৎসরেই মাহির অভিষেক সিনেমা “ভালবাসার রঙ” মুক্তি পায় এবং দর্শকের কাছে এতোটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল যে প্রযোজক শীশ মনোয়ার বলেছিল “সিনেমাটির আয় বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না কে ছাড়িয়ে গেছে”, যে সিনেমাকে দেশের সর্বচ্চ আয়ের সিনেমা বলা হয়। আসলে মাথামোটা লোক ছাড়া এমনটা বলা সম্ভব না, এমনটাই ভাবি আমরা কিন্তু প্রযোজক কি বোঝাতে চেয়েছিল? বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না মুক্তি পায় ১৯৮৯ সালে। ওইসময় একটা টিকিটের দাম কতই বা ছিল? ভালবাসার রঙ বক্স অফিসে রেকর্ড গড়ার কারন ছিল ‘সিনেমাটির প্রথম দিনেই আয় ছিল ২৪ লক্ষ ৮৭ হাজার ৫৭৫ টাকা’। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী একদিনে এত টাকা বক্স অফিসে তুলার ইতিহাসে ভালবাসার রঙই প্রথম। যাই হোক, ২০০০ সনের আগের টাকার মান আর গত পাঁচ বছর আগের মান আকাশ পাতাল পার্থক্য তাই এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করাই ভাল। Continue reading

গোল্ডেন বাঁশ এ্যাওয়ার্ডস-২০১৬

সিনেমায় ভাল পারফরম্যান্সের জন্য সারাবিশ্বে দেওয়া হয় বিশেষ সম্মাননা বা পুরষ্কার। কিন্তু ১৯৮১ সাল থেকে আমেরিকায় সবচেয়ে বাজে সিনেমাগুলোকে পুরষ্কার দেওয়া শুরু হয়। এই পুরষ্কারের উদ্দেশ্য হলো নিম্নমানের সিনেমা বানাতে বা কাজ করতে নির্মাতা ও কলাকুশলীদের অনুৎসাহিত করা। হলিউডে দেওয়া এই পুরষ্কারের নাম Golden Raspberry Awards. এর দেখাদেখি ২০০৯ সালে ভারতে শুরু হয় Golden Kela Awards. আমাদের দেশেওতো কত আজেবাজে ছবি নির্মিত হয়। তাই ২০১৫ সাল থেকে আমরাও আমাদের দেশের সবচেয়ে বাজে সিনেমাগুলোকেও পুরস্কৃত করা শুরু করি। আমাদের ঢালিউডে এই পুরষ্কারের নাম দেওয়া হয়েছে Golden Baash Awards. Continue reading

বালিকা হলো বধূ : অাদর্শ বাণিজ্যিক সিনেমা

নব্বই দশকের জমজমাট বাণিজ্যিক সিনেমার সফল যাত্রায় উল্লেখযোগ্য এবং অালোচনা সৃষ্টিকারী সিনেমা ‘বালিকা হলো বধূ‘। তোজাম্মেল হক বকুল দেশের সবচেয়ে ব্যবসাসফল সিনেমা ‘বেদের মেয়ের জোছনা’-র পরিচালক। তিনি বাণিজ্যিক সিনেমার ব্যবসাসফলতা এবং সিনেমা নির্মাণের মসলা অসাধারণভাবেই প্রয়োগ করতেন। তাঁর সমসাময়িক নির্মাতারা তাঁকে বাণিজ্যিক সিনেমার মাস্টারমেকার বলেই জানতেন। Continue reading

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (২০০৮-১০)

২০০৮ : এই বছর ২৪ টি শাখায় পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তফা সিরাজের ‘রানীঘাটের বৃত্তান্ত’ অবলম্বনে মুরাদ পারভেজ নির্মিত প্রশংসিত চলচ্চিত্র ‘চন্দ্রগ্রহণ’ সর্বোচ্চ ৭টি শাখায় পুরস্কার লাভ করে।এই বছর চিত্রনায়ক রিয়াজ অভিনীত ৩টি চলচ্চিত্র মিলে ১৯ টি শাখায় জাতীয় পুরস্কার লাভ করে,পাশাপাশি তিনি তৃতীয়বারের মত জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। প্রখ্যাত অভিনেত্রী দিলারা জামান, গীতিকার কবির বকুল ও সুরকার ইমন সাহা প্রথমবারের মত জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। Continue reading

অজ্ঞাতনামা : হৃদয়স্পর্শী বাস্তবতা

চলচ্চিত্র: অজ্ঞাতনামা
পরিচালক: তৌকীর আহমেদ
শ্রেষ্ঠাংশে: ফজলুর রহমান বাবু, মোশাররফ করিম, শহিদুজ্জামান সেলিম, নিপুন আক্তার, শতাব্দী ওয়াদুদ

মাসুদ সেজান পরিচালিত “এইম ইন লাইফ” নাটক দেখার সুবাদে সিনেমা সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য বা কৌশল সম্পর্কে ছোট্ট ধারণা হয়েছিল। যা পরবর্তীতে ফিল্ম নিয়ে গবেষনা করে সেই জ্ঞানে কিছুটা শান দিয়েছি।

তবুও ফিল্মের মত বিশাল ভান্ডারে এটা কিছুই না। নাটকটিতে বলা হয়েছিল সিনেমায় কিছু ৩য় বুদ্ধির কাজ করা হলে সিনেমাটির সৌন্দর্য্য অনেক বৃদ্ধি পায় । যা স্পস্টভাবে লক্ষ করা যায় সত্যজিৎ রায়ের সিনেমায়। পথের পাঁচালি সহ অপু সিরিজ কিংবা গুপি বাঘার মত কমেডি ধাঁচের সিরিজের ছবিতেও তা লক্ষ করা যায়। একসময় ভেবেছিলাম বাংলাদেশে মনেহয় আর সত্যজিৎ আসবে না। ১৫-১৬ সালে সিনেমায় উন্নতি দেখে ভেবেছিলাম ১০ বছরের মধ্যেই আমরা সত্যজিৎ রায়ের কোন উত্তর সুরী পেয়ে যাব। কিন্তু না ২০১৬ সালেই মনে হয় পেয়ে গেছি। হ্যা তৌকীর আহমেদ যার মাঝে সত্যজিৎ রায়ের ছায়া খুজে পাওয়া যাচ্ছে। মাত্র ৪-৫ দিনের একটি ঘটনাকে উপজিব্য করে নির্মিত অজ্ঞাতনামা দেখলে মনে হয় ৪০ বছরও মানুষের মনে থাকতে সক্ষম। Continue reading

বাবা কেন চাকর : বাবাদের বাস্তব

রাজ্জাক একাধারে লিজেন্ডারি অভিনেতা ও নির্মাতা। তাঁর ‘মৌচোর, চাঁপা ডাঙার বউ,জ্বীনের বাদশা, সৎভাই, বাবা কেন চাকর, সন্তান যখন শত্রু’ সিনেমাগুলো এক একটা মাইলফলক। সিনেমাগুলোর মধ্যে সাবজেক্টের ভেরিয়েশন আছে।

‘বাবা কেন চাকর’ পারিবারিক মূল্যবোধের, দায়বদ্ধতার অসাধারণ সৃষ্টি। এ সিনেমা যারা দেখেছে তারা যত শক্ত মনের মানুষই হোক না কেন কোথাও না কোথাও তাদের মন কেঁদেছে। রাজ্জাক পুরো সিনেমাকে অদ্ভুত দক্ষতায় ঢেলে সাজিয়েছেন। একটা সিনেমার গল্প শুরুতেই বেদনার হয় না।সুখী পরিবার ধীরে ধীরে অসুখী বা স্বার্থপরতার দিকে ঝুঁকতে থাকে। তখনই শুরু হয় ভাঙন। এই ভাঙনে একজন বাবা পরিবারের অভিভাবক হিশেবে যে করুণ বাস্তবতার স্বাক্ষী হন তারই গল্প ‘বাবা কেন চাকর।’ Continue reading

সিনেমার ভুল: কত স্বপ্ন কত আশা

কত স্বপ্ন কত আশা একটি মধ্যম মানের মৌলিক গল্পের রোমান্টিক এ্যাকশন মুভি। ওয়াকিল আহমেদ পরিচালিত এই সিনেমার ছোট-বড় ৯টি ভুল আমাদের চোখে পড়েছে।

১. নায়ক বাপ্পী ও তার বন্ধুরা যখন মহল্লায় ক্রিকেট খেলছিল তখন সাবেক কমিশনারের গাড়িটা ঠিক পিচের মাঝখানে এসে থামে। সাবেক কমিশনার যখন বাপ্পীকে ধমকিয়ে আবার গাড়িতে উঠতে যায় তখন দেখা গেল গাড়িটা পিচের মাঝখান থেকে সরে ব্যাটিং স্ট্যাম্পের কাছাকাছি চলে এসেছে!!! এমন ক্রিকেটপ্রেমী গাড়ি আগে দেখিনি ? Continue reading

নিরন্তর : যে বাস্তব শেষ হয় না

জীবনে পতিতা-র সাথে কখনো কথা বলেছেন?

তখন অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি। ঢাকা থেকে ক্লাস করি। ক্যাম্পাসের বাসে ছিল আসা-যাওয়া। একদিন আমার ফ্রেন্ডসহ জরুরি কাজ শেষ করে ঢাবি টিএসসি থেকে ফিরছি। ফেরার পথে যে দেরি হয়ে গেছে অনেক তা জানতাম না। আমার হাতঘড়িটা সমস্যা করছিল। ফ্রেন্ডকে বললাম ‘কটা বাজেরে।’ ও বলল ‘রাত প্রায় এগারোটা।’ ভয় পেয়ে গেলাম খানিকটা। ও ছিল খুব সাহসী। ঘরে-বাইরে তেমন কাউকে পরোয়া করত না। স্বাধীন ছিল খুব। তো আমরা গাড়িঘোড়াও পাচ্ছিলাম না। ওর মিরপুর যাওয়া দরকার আমার শ্যামলী। হেঁটেই রওনা দিলাম। আসাদ গেটের যে রাস্তাটা সংসদ ভবন হয়ে খামারবাড়ি গেল সেখানে মোড়ে আসতেই কয়েকটা মহিলাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। Continue reading