← অগ্নি ২

মন্তব্য করুন।

৬টি রিভিউ

  1. আগ্নি ২ কি বাংলা সিনেমা নাকি ভারতীয় বাংলা?

    আমি প্রফেশনাল মুভি রিভিউ লেখক না। মুভি রিভিউ এর গঠন বা উপাদানগুলো সম্পর্কেও আমার সঠিক কোনও ধারনা নেই। শখের বশে একটা মুভির রিভিউ লিখতে বসলাম। মাত্রই দেখা একটা মুভি। অগ্নি ২। সিনেমা হলে গিয়ে নতুন মুভি দেখার অভ্যাসও আমার নাই। তাছাড়া হালের বাংলা সিনেমাও খুব একটা দেখার সুযোগ পাই না। হয়তো ইচ্ছাটাও একটা ফ্যাক্টর হতে পারে এক্ষেত্রে। সবদিক বিবেচনায় কেউ যদি এই রিভিউ এর মধ্যে খেলার চেয়ে ধুলা মানে সিনেমার চেয়ে ব্যাক্তিগত সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতাই বেশি খুঁজে পান তাহলে প্লিজ আমাকে দোষারোপ করবেন না। সেইটা নাহয় অন্য কারো জন্যে রেখে দিলেন।

    অগ্নি ২ এর কাহিনীর মধ্যে আমি নতুন কিছু খুঁজে পাইনি। কাহিনী গতানুগতিকই মনে হয়েছে। তবে উপাস্থপনা টা একটু ভিন্ন ছিল। পরিচালক দর্শকদেরকে নতুন মোড়কে পুরাতন জিনিশই খাওয়াতে চেয়েছেন। তবে সিনেমাটির চিত্রায়নে আধুনিকতার ছোঁয়া ছিল বলতে হবে। একটি অ্যাকশন থ্রিলারে যে সকল উপাদান সাধারনত থাকে তার সবধরনের উপাদানই ছিল। যেমন, মার মার কাট কাট টাইপের মারামারি, নায়িকার গ্লামার, টেকনোলজির ব্যবহার, আইটেম গান এবং ভিলেন হিসেবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন।

    একটি সিনেমার প্রাণ হচ্ছে তার পাত্র পাত্রীরা। এইবার সেইদিকেই আসা যাক। ছবিটি দেখতে বসা কেউ যদি নায়িকা মাহিয়া মাহিকে না চিনে থাকেন তাহলে সে যদি প্রথম দেখায় সিনামাটিকে ভারতীয়বাংলা ছবি বলে ধরে নেন তাহলে কোনোভাবে তাকে দোষ দেওয়া যাবে না। একমাত্র মাহি ছাড়া প্রধান চরিত্রগুলোতে বাঙ্গালী কাউকে পাওয়া গেল না। ভিলেন নাহয় ভারতীয় মেনে নেওয়া গেলো, তাই বলে সিনেমার ভাঁড় চরিত্রটাকেও ভারত থেকে ধার করতে হওয়ায় মনে কষ্ট পেয়েছি। তবে গণেশ চরিত্রে ওই লোকটিকে ভালোই মানিয়েছে। কাহিনীর চরিত্রায়নে ভারতীয় কলাকুশলীদের দাপট দেখে ইদানিং যৌথ প্রযোজনার নামে ভারতীয় সিনেমা বাংলাদেশে নিয়ে আসার যেই ষড়যন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে সেই পালে আরও একটু হাওয়া লাগলো বলেই মনে হলো।

    মাহির অভিনয় আমার ভালোই লেগেছে। অগ্নির মতো অগ্নি ২ তেও সে অনবদ্য অভিনয় করেছে। কিছুদিন আগেও নায়িকা নির্ভর ছবি বাংলাদেশের হিট করবে সেটা কল্পনারও অতীত ছিল। কিন্তু মাহি এই ধারাটাকে ভেঙ্গে দিয়েছে এইকথাটা অগ্নি এবং অগ্নি ২ দেখার পর বলতেই হবে। নায়িকা নির্ভর ছবিতে নায়কের চরিত্রটাকে অনেকসময় আলংকারিক মনে হয়। কিন্তু অগ্নি ২ সিনেমাতে ওম ( রাজা গোস্বামী ওম) কে দেখার পর তা মোটেও মনে হয়নি বরং নবাগত হলেও ওম ‘ইহসান’ চরিত্রটাকে ফুটিয়ে তোলার ব্যাপারে যথেষ্ট মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। সিনেমাটির ভিলেন হিসেবে পাইথন চরিত্রটি যিনি করেছেন (আশিস বিদ্যার্থী) তিনি চরিত্রটিতে আমার মতে যথেষ্ট টুইস্ট আনতে পেরেছেন। ভিলেনের আশেপাশে এতোবেশি সাদা চামড়ার চরিত্র যথেষ্ট দৃষ্টিকটু ছিল।

    দৃশ্যায়নের দিকটি বিবেচনায় আনলে অগ্নি ২ আমার কাছে পুরো নম্বরই পাবে। সিনেমাটির সিনেমাটোগ্রাফি ছিলো অসাধারণ। সিনেমাটি ধরতে গেলে পুরোটাই থাইলান্ডে চিত্রায়ন হয়েছে। তবে কোনো দৃশ্যের চিত্রায়নই আমার কাছে অপ্রাসঙ্গিক মনে হয় নি। গানগুলোর দৃশ্যায়নও চমৎকার ছিল। তবে হোটেলের রুমটাকে বাসাবাড়ির বেডরুম হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টাটাকে দৃষ্টিকটু লেগেছে। এই দৃশ্যগুলো কোনো বাড়িতে করতে পারলেই ভালো হতো। আকশন দৃশ্যগুলোও যথেষ্ট ভালো ছিল। তাছাড়া সিনেমার ভিলেনের আসল পরিচয় উন্মোচনের ধরনটাও আমার ভালো লেগেছে। টেকনোলজির ব্যবহারগুলো দেখানোর দৃশ্যগুলো আর্টিফিশিয়াল বলে মনে হয়নি।

    অগ্নি ২ ছবিটির আরেকটি ভালোদিক হচ্ছে এর গানগুলো। ম্যাজিক মামনি গানটি তো অনেক আগে থেকেই হিট। এটা ছাড়াও আরো যে চারটি গান ছিল সবগুলো গানই ছিল মানসম্মত। পরিচালক গানগুলোর ব্যাপারে যথেষ্ট যত্ন নিয়েছেন এইকথাটা স্বীকার করতে হবে। আগেই বলেছি গানগুলোর চিত্রায়নও ছিল উপভোগ করার মতো। তবে সিনেমাটির পুরো সঙ্গীতায়োজনে কোনও বাংলাদেশীর নাম না দেখে খুবই হতাশ হয়েছি।

    বর্তমানে আমাদের দেশে যেধরণের বাংলা ছবি হচ্ছে সেগুলোর সাথে তুলনা করলে অগ্নি ২ একটি যথেষ্ট মানসম্মত ছবি। এতে অপ্রয়োজনীয় ভাবে কোনো অশ্লীল দৃশ্য ঢুকানো হয়নি যা আজকাল বাংলা ছবিতে নিয়মিত ভাবেই হচ্ছে। সবদিক বিবেচনায় নিলে অগ্নি ২ কে আমি সফলই বলব যদিও সিনেমাটিকে বাংলা ছবি হিশেবে রায় দিতে আমার যথেষ্ট আপত্তি আছে।

  2. কাহিনী সংক্ষেপঃ- নিজের ভাই গুলজারের খুনের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পাইথন খুন করে তানিশার বয়ফ্রেন্ড ড্রাগনকে। নিজের প্রিয়জন হত্যার প্রতিশোধ নিতে আরেকটি নতুন মিশনে নামে তানিশা। ঘটনাক্রমে তার সঙ্গী হয় এহসান নামের এক হ্যাকার। ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে অনেক অজানা ঘটনা।

রিভিউ লিখুন

আরও ছবি