Select Page

‘ডুব’ বিতর্কের সমাধান কোথায়?

‘ডুব’ বিতর্কের সমাধান কোথায়?

doob-irrfan-khan

হুমায়ূন আহমেদের জীবনী অবলম্বনে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীডুব’ নির্মাণ করেছেন— এমন গুজব নিয়ে ঝড় বইছে সিনে ইন্ডাস্ট্রিতে। এ নিয়ে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেছেন ফারুকী ও মেহের আফরোজ শাওন

ফারুকী জানালেন, তিনি হুমায়ূনের বায়োপিক বানাচ্ছেন না। আবার সিনেমাটি হুমায়ূন জীবনী থেকে অনুপ্রাণিত কিনা— তাও স্পষ্ট করেননি। তার মতে, ‘আমার সব গল্পই আশপাশের জীবন ও দূরের জীবনের বিভিন্ন দিক থেকে অনুপ্রাণিত। পৃথিবীর সেরা গল্পগুলোর ক্ষেত্রেও একই জিনিস কাজ করে। এরপর আমি আমার মতো করে একটা গল্প বানিয়েছি। বায়োপিক বানালে তো আমি ঘোষণা করতাম। আমি এই ছবিতে আশপাশের কিছু জিনিস থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে একটা পরিবারের গল্প বলার চেষ্টা করেছি। আর জীবনের গেল্প কে কোথা থেকে অনুপ্রেরণা নিচ্ছে, এটা কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।’

এমনকি হুমায়ূনের গল্প লেখার প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ বহু গল্প বিচিত্র মানুষের জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লিখেছেন। পৃথিবীর সেরা সাহিত্য, সেরা সিনেমা এভাবেই তৈরি হয়েছে। এটিই আর্টের কারবার, আর্ট এভাবেই তৈরি হয়। আমিও এভাবে রসদ নিই। এখন আমি যতক্ষণ পর্যন্ত না দাবি করছি এটা উনার (হুমায়ূন) জীবন নিয়ে বানাচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত কারো কিছু বলার নেই।’

Mostofa-Sarwar-Farooki

তবে এটাও বলেন, ‘আমার এই ছবির প্রধান চরিত্রের নাম জাবেদ হাসান, যাতে অভিনয় করেছেন ইরফান খান। যাঁর বাড়ি সৈয়দপুরে। হুমায়ূন আহমেদ কোথা থেকে এল?’

হুমায়ূন কন্যা শিলা জানান, ফারুকী যদি তার বাবার জীবনের গল্প সরাসরি না বলে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাণ করেন তবে কিছু বলার নেই। এ যুক্তিতেও ছাড় দিতে রাজি নন শাওন।

তিনি বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ বা তাঁর জীবন থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে ছবি। উনি [পরিচালক] বলছেন, এটা বায়োপিক না। নামধাম উল্লেখ করবেন না, ফাইন। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের জীবনের একটি ঘটনাও যদি ছবিতে থাকে, আবার বলছি, একটি ঘটনাও যদি থাকে, হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সবাই জীবিত আছেন, সবচেয়ে বড় কথা সবাই অ্যাভেইলেবল—এঁদের সঙ্গে একটু কথা বলে নেওয়াটা ভদ্রতা। কারো উদ্দেশ্য ঠিক থাকলে তিনি এটাই করবেন। মানুষ কখন যোগাযোগ করে না বা লুকিয়ে রাখে, যখন তার উদ্দেশ্য ভালো হয় না। আমি ধারণা করছি, উদ্দেশ্যটা ভালো ছিল না। সে জন্যই এত লুকোচুরি, লুকিয়ে শুটিং করা। পরিচালক কিন্তু হুমায়ূনের নাম উল্লেখ করছেন না, কনফার্ম করছেন না, আবার অস্বীকারও করছেন না। হুমায়ূনের জীবন থেকে অনুপ্রাণিত না হলে ওনাদের অস্বীকার করে বলা উচিত, ‘অসম্ভব, হুমায়ূন আহমেদের জীবনের সঙ্গে ছবির গল্পের কোনো মিল নেই।’ এটুকু বলার সাহস রাখা দরকার। আর যদি হুমায়ূনের জীবনের সঙ্গে মিল থাকে, তাঁর জীবনের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের চরিত্র যদি ছবিতে আসে তাহলে অবশ্যই অনুমতি নেওয়া তাঁর দায়িত্ব। দেশীয় আইন এ ব্যাপারে কী বলে তা এখনো জানি না, জেনে নেব।’

meher-afroz-shaon

এদিকে ফেসবুক স্ট্যাটাসে ফারুকী বলেছিলেন, ‘আনন্দবাজারকে ধন্যবাদ হুমায়ুন আহমেদের দুই পরিবারেরই ইন্টারভিউ নেয়ার জন্য। আমাদের টেলিভিশন আর পত্র পত্রিকা দেখলে তো মনেই হয় না যে প্রথম পরিবারটা পৃথিবীতে এক্জিস্ট করে। হ্যাঁ আমি বুঝি, প্রবল আত্মসম্মান বোধ এবং অভিমান থেকে উনারা দুরে থাকেন। পাশপাশি এটাও সত্য হুমায়ূনের যাবতীয় স্মৃতির উত্তরাধিকার হিসাবে তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে জনমানসে প্রতিষ্ঠিত করার একটা মিশনও বোধ হয় এখানে চলমান। তবে, ভাববেন না আমি কেবল উনার প্রথম পরিবারের ব্যাথায় কাতর। এক লেখায় আমি লিখেছিলাম আমি শাওন এবং তার সন্তানদের বেদনা অনুভব করেও কাঁদছি।’

farooki-irrfan

এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ শাওন বলেন, ‘তিনি বাংলাদেশের একজন নামকরা নির্মাতা। আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য তাঁকে খুব কষ্ট করতে হতো না। শোভন-অশোভনের কিছু বিষয় আছে, এগুলো সবারই মেনটেইন করা উচিত। এ ঘটনায় যতটা না শকড হয়েছি, তার চেয়ে বেশি শকড হয়েছি আজকে [গতকাল] ফেসবুকে ওনার স্ট্যাটাস পড়ে। উনি হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের অভিভাবক সেজে গেলেন! সেখানে তিনি ‘দুই পরিবার’ বলে বসলেন, হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের কেউ ওনাকে এই অধিকার দিয়েছে বলে তো আমার মনে হয় না। উনি বলে বসলেন, একটা মহল কী করছে আরেকটা মহলের কী ইচ্ছে। আমরা তো ওনাকে অভিভাবক মনে করিনি। হুমায়ূন আহমেদ নেই কিন্তু আমরা অভিভাবকহীন না। এটলিস্ট উনি অভিভাবক নন। পুরো বিষয়টাই শকিং।’

পাল্টাপাল্টি আলাপে মনে হচ্ছে সহজে ‘ডুব’ বিতর্ক কাটছে না।

উদ্ধৃতি সূত্র : ফারুকীর ফেসবুক স্ট্যাটাস, প্রথম আলো, পরিবর্তন ডটকম ও কালের কণ্ঠ।


মন্তব্য করুন