Select Page

বরাবরের মতোই দুই বাংলা আলাদা না

বরাবরের মতোই দুই বাংলা আলাদা না

shankochil

‘দুই বাংলাকে কখনোই আলাদা মনে হয় না। আমার কাছে বাংলা একটাই।’টালিগঞ্জের অন্য সতীর্থদের প্রতিধ্বনি করলেন প্রসেনজিৎ। যৌথ প্রযোজনার সিনেমা ‌‘শঙ্খচিল’র প্রিমিয়ারে মঙ্গলবার ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। ওই সিনেমায় তারও লগ্নি আছে। উপরের কথাটি বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় সভায়। ‘শঙ্খচিল’মুক্তি পাচ্ছে পয়লা বৈশাখে। ঢাকায় তার সফরসঙ্গী ছিলেন সিনেমাটির পরিচালক গৌতম ঘোষ। সকালে হয় সংবাদ সম্মেলন। আর সন্ধ্যায় ছিল প্রিমিয়ার।

প্রসেনজিৎ বলেন, ‘দুই বাংলাকে আলাদা মনে হয় না। আমার কাছে বাংলা একটাই। ‘মনের মানুষ’ চলচ্চিত্রের পর আমার নতুন চলচ্চিত্র মুক্তি পেতে পাচ্ছে। কিন্তু আমার কাছে নতুন নয়। এর আগে মনের মানুষে যারা ছিলেন তাদের অনেকেই এই চলচ্চিত্রেও আছেন। ফলে এতে কাজ করতে গিয়ে বেশ আনন্দ পেয়েছি।’

১৯৪৭ সালের ব্রিটিশ ভারত ভাগ ও পরবর্তী সময়ে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখের গল্প ‘শঙ্খচিল’। এর কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও কুসুম শিকদার। তাদের মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন নবাগত অভিনেত্রী অনুম রহমান খান।

প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানের আগে ফরিদুর রেজা সাগর ‘শঙ্খচিল’ নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাভাষায় এমন একটি সিনেমা নির্মাণ হলো যা দেখে মানুষ বলতে বাধ্য হবে যে আমাদের হৃদয়ে বাংলাদেশ।’

shankochil1

গৌতম ঘোষ বলেন, ‘বাংলাদেশেই আমার শেকড় লুকিয়ে আছে। বাংলাদেশের মানুষের আন্তরিকতা আমি কখনোই ভুলি না। আমি যখনই বাংলাদেশের কোনো কাজ করি তখন আমার বিপুল আনন্দ হয়। তাই বলি, শঙ্খচিল আপনারা দেখুন। দেখে আপনাদের মতামত জানান। ছবিটি হচ্ছে একটি দুরন্ত আশা, ও উড়ন্ত পাখির রূপক।’

কুসুম শিকদার বলেন, ‘এই মুহূর্তে কথা বলার স্পর্ধা আমার কমে যাচ্ছে। আমার এত নিকটে যিনি দাঁড়িয়ে আছেন (গৌতম ঘোষকে লক্ষ্য কর) আমার এখনো ভাবতে অবিশ্বাস হচ্ছে যে ইন্টারন্যাশনালি যে মানুষটি খ্যাতিমান তার ছবিতে আমি কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। মনে হয় ঘোরের মধ্যে আছি। এর জন্য প্রথমে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই, আর তারপর গৌতম স্যারকে। যিনি আমাকে সহ্য করেছেন, এবং আমাকে এই চরিত্রটির জন্য নির্বাচন করেছেন। এটা আমার জীবনের অত্যন্ত বড় একটা অর্জন। তারচেয়ে বড় অর্জন ছবিটি মুক্তির আগেই ভারতের ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড জিতে নিল। এটা সত্যিই বিশাল একটা অর্জন।’

ছবিটির শুটিংয়ের সময় নানাভাবে সহযোগিতা করেন বিজিবির মেজর জেনারেল আলিফ আহমেদ। প্রিমিয়ারের আগে তিনি বলেন, ‘আসলে একটা ভিন্ন পরিবেশে আমি এখানে উপস্থিত হয়েছি। কথা বলছি। আমাকে এখানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য সত্যিই কৃতজ্ঞ। ছবিটির কিছু অংশ চিত্রায়ন করা হয়েছে সীমান্তে। সেখানে ভারত থেকে বিএসএফ এবং বাংলাদেশ থেকে আমরা বিজেবি যতটুকু সহায়তা করা দরকার, আমরা করেছি। শুনেছি ছবিটি নাকি অত্যন্ত উঁচুমানের একটি ছবি হয়েছে।’

shankochil3

সিনেমাটির শুটিং অভিজ্ঞতা নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে বাংলা ট্রিবিউনকে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘এটা অসাধারণ। আমার জীবনে এমন অভিজ্ঞতা হয়নি! এক দেশ থেকে আরেক দেশ গিয়েছি পায়ে হেঁটে! ভাবা যায়! ভোরবেলা সীমান্তে পৌঁছে দেখি ভিড় জমে গেছে। কাতারে কাতারে লোক দাঁড়ানো। একপাশে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স দাঁড়িয়ে আছে আমাকে অভিবাদন জানানোর জন্য। অন্য পাশে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সদস্যরা। মাঝখানে একটা ছোট্ট ব্রিজ। আমার গাড়ি গিয়ে একটা জায়গায় দাঁড়ালো। আমি ছ’পা হেঁটে ব্রিজটা পার হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছে গেলাম।সেখানে আমি পনেরো-ষোলোদিন শ্যুটিং করেছি। এটা আমার জন্য ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা।’

সংকলন সূত্র : রাইজিংবিডি, বাংলামেইল ও বাংলা ট্রিবিউন

 


মন্তব্য করুন