আনোয়ার হোসেন

বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে মুকুটহীন সম্রাট হিসেবে খ্যাত অভিনেতার নাম আনোয়ার হোসেন (Anwar Hossain)। ১৯৬১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘তোমার আমার‘ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে তার অভিষেক ঘটে। প্রথম দিকে খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করলেও পরবর্তীতে তিনি মূল ও চরিত্রাভিনেতা হিসেবে অভিনয় করে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৬৭ সালে ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ চলচ্চিত্রে নাম ভূমিকায় দুর্দান্ত অভিনয়ের কারণে তিনি ‘মুকুটহীন সম্রাট’ উপাধি লাভ করেন।

পিতা নজির হোসেন এবং মাতা সাঈদা খাতুনের তৃতীয় সন্তান আনোয়ার হোসেন স্কুল জীবনথেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ থেকে অভিনয় শুরু করেন। স্কুলে আসকার ইবনে শাইকের পদক্ষেপ নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। রূপালী জগতের তারকা ছবি বিশ্বাস, কাননদেবী ইত্যাদি-র প্রতি আকর্ষণ থেকে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নেন আনোয়ার হোসেন। পরিচালক মহিউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করেন তিনি। মহীউদ্দিন তখন ‘মাটির পাহাড়’ চলচ্চিত্র নির্মানের কাজ করছেন। চলচ্চিত্রের জন্য সকল চরিত্র নির্দিষ্ট হয়ে যাওয়ায় আনোয়ার হোসেন এ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পাননি, কিন্তু পরবর্তী ছবি ‘তোমার আমার’-এ খলনায়ক ‘বীরেন’ চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান।

৫২ বছরের অভিনয় জীবনে আনোয়ার হোসেন প্রায় পাঁচ শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেন। লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে প্রাণবন্ত, বলিষ্ঠ ও বাস্তবধর্মী অভিনয় করার জন্য ১৯৭৫ সালে প্রথম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন তিনি। পরবর্তীতে ২০১০ সালে চলচ্চিত্রে সামগ্রিক অবদানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আজীবন সম্মাননা লাভ করেন আনোয়ার হোসেন।

আনোয়ার হোসেন অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রসমূহ হল – জোয়ার এলো, কাঁচের দেয়াল, নতুন দিগন্ত, নাচঘর, ধারাপাত, রাজা এলো শহরে, বন্ধন, গোধূলীর প্রেম, রাজা সন্ন্যাসী, রূপবান, জরিনা সুন্দরী, পরশমনি, জঙলী ফুল, রাখাল বন্ধু, জুলেখা, শহীদ তীতুমীর, বাঁশরী, সপ্তডিঙ্গা, গাজী কালু চম্পাবতী, স্বর্ণকমল, আনোয়ারা, নীল আকাশের নীচে, স্বরলিপি, বাহরাম বাদশা, লালন ফকির, অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী, বাঘা বাঙালী, রংবাজ, দয়াল মুরশিদ, আলোর মিছিল, ঈশা খাঁ, কার হাসি কে হাসেন, লাঠিয়াল, দেবদাস, বড় ভালো লোক ছিল, লালুভুলু, ভাত দে, পেনশন, শিরি ফরহাদ, ত্যাজ্যপুত্র, আমার দেশ আমার প্রেম ইত্যাদি।

আনোয়ার হোসেন পড়াশোনা করেছেন জামালপুরে। ১৯৫১ সালে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করার পরে আনন্দমোহন কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৭ সালে তিনি নাসিমা খানমকে বিয়ে করেন। তিনি চারটি পুত্র সন্তানের জনক।

২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই কিংবদন্তী অভিনেতা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

 

উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র

ব্যক্তিগত তথ্যাবলি

পুরো নাম আনোয়ার হোসেন
ডাকনাম আনু
জন্ম তারিখ নভেম্বর ৬, ১৯৩১
মৃত্যু তারিখ সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৩
জন্মস্থান মুরুলিয়া, জামালপুর

কর্মপরিধি

পুরষ্কার

পুরষ্কার বছর ফলাফল বিভাগ/গ্রহীতা চলচ্চিত্র
জয়ী শ্রেষ্ঠ অভিনেতা লাঠিয়াল