Select Page

‘ডুব’ বিতর্ক ও প্রচারণার নতুন ধরন

‘ডুব’ বিতর্ক ও প্রচারণার নতুন ধরন

ডুব’ নিয়ে গত দুদিন ধরে সরগরম ফেসবুক। কোন কোন চলচ্চিত্রযোদ্ধা ডুবের জন্য জান দিয়ে দিচ্ছেন আর শাওনের পিণ্ডি চটকাচ্ছেন আবার মিনমিনে গলায় কেউ কেউ শাওনকে সাপোর্ট করতেও দেখেছি। তবে আশার কথা হল সবাই চান ‘ডুব’ মুক্তি পাক। সত্যি বলতে একটা ছবির অপমৃত্যু কখনোই কাম্য নয়। তবে আজ বাংলা ট্রিবিউনের রিপোর্ট এবং জাজের পোস্টের পর আশা করি ঘটনা নিয়ে কেউ আর অন্ধকারে থাকবেন না। যদিও ফারুকী সাহেবের বক্তব্যটা এখনো পাইনি।

যাই হোক,এটাকে বলে ‘হুজুগ’ তৈরি, ভদ্রভাষায় ‘হাইপ’ ও বলতে পারেন।  কোন ছবি মুক্তির জন্য হাইপ তৈরি করাটা স্বাভাবিক। অন্তত বিশ্ব সিনেমার দিকে তাকালে দেখা যায়, ছবি মুক্তির আগে প্রমোশনের মতো এটাও একটা অংশ। বাংলাদেশের এই মিডল ট্র্যাক ফিল্মের জন্য তাই আমি এটাকে হেলদি মনে করি। কারণ এমনিতেই আমাদের এই ঘরাণাকে নাটক বলা এবং দর্শক দেখে না বলে একঘরে করে দেবার একটা চেষ্টা চলে। তার মধ্যেও যদি ব্যবসা করে দেখানো যায় তাহলে আখেরে লাভ এই ইন্ডাস্ট্রির। তখন প্রযোজকরা এসব ফিল্মে ভালোই পয়সা ঢালবে।

হাইপ তৈরির এমন জলন্ত উদাহরণ ‘আয়নাবাজি’। প্রমোশনের আর কোন দিক বাদ রাখেনি। সর্বশেষে এসে ‘চুমু দৃশ্যের’ মতো সস্তা প্রচারণাও করেছে। আর এর ফলাফল, দারুণ একটা হাইপ ক্রিয়েট হয়েছিল। ‘হুজুগ’ টা এমন ছিল যে “এই ছবি না দেখলে এবং এই ছবির প্রচারণা না করলে জাতই থাকবে না।” এতে অমিতাভ রেজা শতভাগ সফল। ফারুকীও সেইম জিনিসটাই করতে চাচ্ছেন। পার্থক্য হলো অমিতাভ রেজা নিপাট ভদ্রলোক তাই নিজের দূর্বলতা বিনয়ের সাথেই স্বীকার করেন। কিন্তু ফারুকী প্রত্যেক সেকেন্ডেই রং বদলান। হিপোক্রেসি ওভারলোডেড।

ইন্দ্রনীল রায় বলেও দিয়েছেন যে তাদের পুরো রিপোর্টটা ফারুকীর কথাতেই হয়েছিল। আমার ওভাবে মনে পড়ছে না- খুব সম্ভবত নওয়াজুদ্দীনকে নিয়ে ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ অথবা ইরফান খানকে নিয়ে ‘ডুব’ করার কথা প্রথম ভ্যারাইটিই জানিয়েছিল। সো, বোঝাই যাচ্ছে তাদের সাথে ফারুকীর ভালোই সম্পর্ক আছে। তাদেরকে দিয়ে রিপোর্ট করিয়ে,’সাসপেন্ড’কে ‘ব্যান’ লিখিয়ে, পাবলিশের একঘণ্টার মধ্যে শেয়ার দিয়ে, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে বলে মায়াকান্না কাঁদাটা কোন লেভেলের হিপোক্রেসি তা মাপা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। প্রথম থেকেই সন্দেহ হচ্ছিল, কারণ জাজ, ফারুকী, ইমপ্রেস, শাওন একই সার্কেলেরই মেম্বার। সুতরাং সার্কাসটার মধ্যে কোন না কোন কিন্তু আছে। যদিও শাওনের মা তহুরা আলি, তাও জাজ-ফারুকীর পাওয়ার ও কম নয়। জাজ যেখানে ডাকলেই তথ্যমন্ত্রী নাচতে নাচতে চলে আসেন, দুই মাসের পুরনো ছবির মালয়শিয়া প্রিমিয়ারের সময় টিকেট ধরিয়ে দিলে মন্ত্রী সাহেব সস্ত্রীক নাচতে নাচতে মালয়শিয়া চলে যান, ফারুকী ইনু ভাই ব্যবহার করেন সেখানে তথ্য মন্ত্রণালয় ছবি আঁটকে দিচ্ছে!

আসল কাহিনী হল পয়লা বৈশাখে জাজের ‘ধ্যাততেরেকি’ রিলিজের প্ল্যান ছিল। কোন কারণে হয়তো পিছিয়ে যাচ্ছে। তাই তড়িঘড়ি করে ‘ডুব’ টা সেই স্লটে মুক্তি দিতে চাচ্ছে যেটা আজকে তাদের পোস্টে পরিস্কার। তাই এই দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে হিউজ পাবলিসিটির জন্য এর চেয়ে ভালো উপায় আর নেই। তাই তারা বাংলাদেশি মিডিয়াও দর্শকেরর ব্যবহার করে ভালোই পাবলিসিটি করিয়ে নিল। আর এতে অবশ্যই এমন কিছু মানুষও পাওয়া গেল যারা মনে করবে ‘ডুব’ না দেখলে জীবনটাই বৃথা। আর শাওন ম্যাডামও টাকার জন্য যে কোন কিছু করতে পারে, সেটা নতুন করে আর বলার কিছু নেই। তাই আমার মনে হয় ‘ডুব’ নিয়ে কথা বলতে থাকাটা আমাদের জন্য “নিজেদের খেয়ে ফারুকীর ছবির প্রচারণা” ছাড়া আর কিছু নয়।

পুনশ্চ : শাওনকে এভাবে প্রচারণায় ব্যবহার করার পর মনে হয় না ছবিতে খুব একটা নেগেটিভলি দেখাবে। বাবা-মেয়ের সম্পর্কের উপরই গল্পটা চালিয়ে দেবে বলে মনে হচ্ছে। আর এমনিতেই ‘রঞ্জনা আমি আর আসবো না’ থেকেই পার্ণো আমার ক্রাশ। ওর নেগেটিভ এপিয়ারেন্স এমনিতেও আমার খারাপ লাগবে।


মন্তব্য করুন