সাইমন সাদিক

বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে সাইমন সাদিকের (Saimon Sadik) অভিষেক ঘটে গুণী পরিচালক জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত জ্বী-হুজুর চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। প্রথম চলচ্চিত্রে খুব বেশী সফল হতে না পারলেও দ্বিতীয় চলচ্চিত্র পোড়ামনে অভিনয় করে সাইমন জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এবং চলচ্চিত্রে তার অবস্থান শক্তিশালী করতে সক্ষম হন। 

জাকির হোসেন রাজুর একান্ত আগ্রহ ও প্রচেষ্টায় চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে সাইমনের। সাগর শিকদার নামে চলচ্চিত্রের এক জুনিয়র শিল্পীর মাধ্যমে জাকির হোসেন রাজুর সাথে সাইমনের পরিচয় ঘটে। রাজু তাকে নায়ক বানানোর স্বপ্ন দেখান, সেই স্বপ্নে বিভোর হয়ে বারিধারায় কর্মরত চাকরীটিও বাদ দিয়েছিলেন সাইমন, কিন্তু নায়ক হওয়া হচ্ছিল না। প্রায় দু্ই বছর পর আনন্দমেলা চলচ্চিত্রের প্রযোজনায় জ্বী হুজুর চলচ্চিত্রের নায়ক হিসেবে সাইমন কাজ শুরু করেন।  এই সময়ের কষ্টকর স্মৃতিকে স্মরণ করে সাইমন দৈনিক ডেসটিনিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, ‘জাকির হোসেন রাজু স্যারের সঙ্গে আমি প্রায় ৪ বছর। এই ৪ বছর অনেক জায়গায় তার সঙ্গে ঘুরেছি। যেখানেই গেছি সেখানেই নেতিবাচক কথা শুনতে হয়েছে। তাদের কারো কারো কথায় অন্তরটা বিষিয়ে উঠেছে। কান্না পেয়েছে। ওয়াশরুমে গিয়ে কেঁদেছিও কখনো কখনো। কেউ কেউ বলেছেন, রাজু ভাই এটাকে কোথা থেকে ধরে এনেছে? এটা কোনো নায়ক হল? মানুষ মানুষকে এভাবে কষ্ট দিতে পারে তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। সবকিছু ছেড়ে দিয়ে গ্রামে চলে যেতে চাই। কিন্তু পরিচালক আমাকে যেতে দেন না। তিনি বলেন, এসব কষ্ট মেনে নিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। কষ্টকে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। যারা এসব বাজে কথা বলছেন তারা তো তোমাকে নায়ক বানাবেন না, তোমাকে নায়ক বানাব আমি। তার উৎসাহে আবার চাঙ্গা হয়েছি।’ জ্বী-হুজুরের মুক্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কেঁদেছিলেন সাইমন।

জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত সাইমনের দ্বিতীয় ছবি পোড়ামনের আকাশচুম্বী সাফল্য পায়। সাইমনকে নিয়ে একাধিক ছবিতে কাজ করা শুরু করেন রাজু। জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে দবির সাহেবের সংসার চলচ্চিত্রের শ্যুটিং শুরু হয়। কিন্তু ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজ এবং পরিচালক জাকির হোসেন রাজুর সাথে দুর্ব্যবহারের কারণে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। জাজ-এর সকল ছবি থেকে সাইমন বাদ পড়েন, সাইমনের সাথে অভিনয়ে অস্বীকৃতি জানান নায়িকা মাহি এবং রাজু-সাইমন জুটির ভাঙ্গন ঘটে। এমনও শোনা গিয়েছিল – সাইমন অভিনীত ছবি জাজ-এর প্রজেক্টরে পরিবেশন করা হবে না। কিন্তু রাজুর সাথে বিচ্ছেদের পর সাইমনকে নিয়ে অন্যান্য পরিচালকরা কাজ শুরু করেন এবং সাইমন ধীরে ধীরে নিজের অবস্থানকে শক্ত করতে কাজ করে চলছেন।

২০১৪ সালে সাইমন সাদিকের বাল্যবন্ধু শাহাদাৎ হোসেনের অকাল মৃত্যুর পরে বন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাইমন এলাকার বন্ধুদের নিয়ে গঠন করেন ‘দূর্বার শাহাদাৎ’ নামের একটি সংগঠন। সাইমন এ সংগঠনের সভাপতি। সংগঠনটি এলাকার রাস্তা সংস্করণ, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।

একান্নবর্তী পরিবারে সাইমনের জন্ম এবং বেড়ে উঠা। বাবা-মা এবং আরও আট চাচার সাথে একত্রে বসবাস করেছেন নায়ক হওয়ার পূর্বে। সাইমনের তিন বোন পপি, পলি, দীপু এবং এক ভাই সাফায়েত।

 

উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র

ব্যক্তিগত তথ্যাবলি

পুরো নাম সাইমন সাদিক
ডাকনাম সাইমন
জন্ম তারিখ আগস্ট ৩০, ১৯৮৫
জন্মস্থান কলাপাড়া, কিশোরগঞ্জ।

কর্মপরিধি

পুরষ্কার

পুরষ্কার বছর ফলাফল বিভাগ/গ্রহীতা চলচ্চিত্র
মনোনীত শ্রেষ্ঠ অভিনেতা জান্নাত
জয়ী শ্রেষ্ঠ অভিনেতা জান্নাত