কি দারুন দেখতেঃ যে সিনেমার শেষে স্বস্তি নিয়ে হল ত্যাগ করা যায় না

Ki darun Dekhteশনিবারে দেখে ফেললাম বাপ্পি মাহির নতুন সিনেমা কি দারুন দেখতে। ২০১৪ সালে এটাই সিনেমা হলে গিয়ে দেখা প্রথম সিনেমা। বাপ্পি মাহির সিনেমা আমি এর আগে দেখিনি । তাই তাদের অভিনয় কেমন ছিল আগে বা কেমন উন্নতি হয়েছে আমি বলতে পারবো না। কিন্তু সিনেমা দেখতে বসে প্রথম হাফ খারাপ লাগেনি। সেকেন্ড হাফ গতানুগতিক হলেও দর্শকদের হাততালি আর উল্লাস দেখে বুঝলাম তাদের কাছে অন্তত খারাপ লাগেনি।

আলোচনা সমালোচনার আগে কাহিনী পাঠকদের বলে নিই, ছোট আপন (বাপ্পি) নদী-ভাংগনে ঘর-বাড়ী হারিয়ে দাদার সাথে ঢাকা আসা মাত্রই দাদাকে হারায়। ঘটনা ক্রমে তার আশ্রয় হয় চিটার সোহেল খান এর বাসায়। Continue reading

কি দারুন দেখতে: দর্শক তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে পারবেন

Ki darun Dekhte*****স্পয়লার অ্যালার্ট: ছবির কাহিনী সংক্ষেপ অংশে কাহিনী পুরোটা বর্ণনা করা হয়েছে ****

প্রথম শো শুরু হওয়ার বেশ কিছুক্ষন আগেই হলে চলে গিয়েছিলাম। শীতের দিনে প্রথম শো-তে তেমন একটা দর্শক হয়না। প্রায় ফাঁকা হলেই দেখতে ঢুকে গেলাম আব্দুল্লাহ জহির বাবুর চিত্রনাট্য এবং ওয়াজেদ আলী সুমনের পরিচালনায় বাপ্পী ও মাহী অভিনীত ছবি “কি দারুন দেখতে“।

কাহিনী সংক্ষেপ:
ঢাকায় এসেই দাদা মারা যায় ছোট ছেলে আপনের। ফলে তার আশ্রয় হয় পেশাদার এক বাটপারের ঘরে। বাটপার দম্পতি নি:সন্তান হওয়ায় আপন কে তাদের নিজের সন্তানের মত লালন পালন করে। আপনও তাদের বাবা মা বলেই ডাকতে শুরু করে। পরবর্তীতে এই আপনই বড় হয়ে আমাদের নায়ক বাপ্পীতে পরিণত হয়। বাপ্পীর বাটপার বাবা বাপ্পীকে বাটপারি করে এক নামকরা কলেজে ভর্তি করিয়ে দেয়। Continue reading

উধাও (২০১৩) সাউন্ডট্র্যাক

Udhaon_Posterদৌড় দে, দৌড় দে
সময় থাকতে দৌড় দে
মাথায় একটা গামছা বাইন্ধা যেমনে পারস দৌড় দে
জীবনডারে বাজী রাইখা ঘোড়ার মত দৌড় দে
ধরতে পারলে খবর আছে, মা-মা কইয়া দৌড় দে…… Continue reading

দাবাং ট্রেলার

দাবাং নামে একটি চলচ্চিত্র মুক্তি পেতে যাচ্ছে। বলিউড অভিনেতা সালমান খান অভিনীত দাবাং নয়, বাংলাদেশি পরিচালক আজাদ খান পরিচালিত সিনেমা দাবাং। ছবিতে অভিনয় করেছেন জায়েদ খান, বিন্দিয়া। আছেন রাভিনা, অমিত হাসান। ট্রেলারটি দেখে নিতে পারেন – এমন ছবির ট্রেলার মিস করা উচি হবে না। Continue reading

পর্দার পিছের অবহেলিত মানুষগুলো

একটা ভালো চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রথম প্রশংসার দাবীকার কে হয়ে থাকেন ?

আসলে আমি বলতে চাইছি, আপনি যখন নতুন বাংলা চলচ্চিত্রটির বিজ্ঞাপন দেখেন আপনার চোখে প্রথমে নিশ্চই অভিনেতা এবং অভিনেত্রীরাই আটকে থাকেন (সম্ভবত) আপনি কি কখনো ডিরেক্টর বা স্ক্রিপ্ট রাইটার অথবা কোরিয়োগ্রাফার বা একশন ডিরেক্টরের নামগুলো খেয়াল করেন কি ? Continue reading

শাকিব খান সালতামামি ২০১৩

imagesশাকিব খানের  ক্যারিয়ারে ২০১৩ সালটি সবচেয়ে উজ্বল একটি বছর। নিজেকে পরিবর্তনের ঘোষনা দিয়ে তার বাস্তবায়নের ফল পেয়েছেন তিনি এবছর। দর্শক প্রিয় ও আলোচিত মুভি, সেরা অভিনেতা হিসেবে ২য় বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সহ আরো উল্লেখযোগ্য স্বীকৃতি তার নামের পাশে যুক্ত হয়েছে।

একনজরে ২০১৩ সালে শাকিব খান: Continue reading

সূর্য দীঘল বাড়ী-র চৌত্রিশ বছর

বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সূর্য দীঘল বাড়ী একটি উজ্জ্বল নাম। সাহিত্যিক আবু ইসহাক মোট তিনটি উপন্যাস লিখেছিলেন, বলা হয় সূর্য দীঘল বাড়ী তার মধ্যে শ্রেষ্ঠতম। চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলন কর্মী মসিহউদ্দিন শাকের এবং শেখ নিয়ামত আলী যৌথভাবে এই উপন্যাসকে চলচ্চিত্রে রূপ দেন যা পরবর্তীতে বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে চিহ্নিত হয়। ১৯৭৯ সালের ৩০শে ডিসেম্বর তারিখে সূর্য দীঘল বাড়ী চলচ্চিত্র মুক্তি লাভ করে। চৌত্রিশ বছর বাদে বাংলা মুভি ডেটাবেজ সূর্য দীঘল বাড়ী সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত নিয়ে পুনরায় দর্শকের সামনে উপস্থিত করার প্রয়াস পায়। সূর্য দীঘল বাড়ী-র চৌত্রিশ বছর পূর্তিতে বাংলা মুভি ডেটাবেজ এর বিশেষ আয়োজন। Continue reading

সূর্য দীঘল বাড়ী নিয়ে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের চিত্রসমালোচনা

Surjo Dighal Bari 1সূর্য দীঘল বাড়ী উপন্যাস লিখেছিলেন আবু ইসহাক। মসিহউদ্দিন শাকের এবং শেখ নিয়ামত আলী সম্মিলিত ভাবে এই উপন্যাসকে চলচ্চিত্রে রূপ দিয়েছেন ১৯৭৯ সালে। চলচ্চিত্র মুক্তির পর ১৯৮১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ‘চলচ্চিত্র পত্র’ এই চলচ্চিত্রের উপর একটি বিশেষ সংখ্যা বের করে। এতে কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস এই চলচ্চিত্রটি সম্পর্কে সমালোচনা প্রকাশিত হয় যার উল্লেখযোগ্য অংশ অনুপম হায়াৎ রচিত ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাস’ গ্রন্হ থেকে বিএমডিবির পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল। 

সূর্য দীঘল বাড়ী আমাদের চলচ্চিত্রে একচ্ছত্র দাপটে প্রতিষ্ঠিত ন্যাকা, ছ্যাবলা ও নকলবাজে গিজগিজ করা বাড়িঘর কাপাঁবার জন্য প্রথম প্রকৃত আঘাত। এর আগে ভালো ছবি তৈরীর চেষ্টা আরো কয়েকবার হয়েছে, কিন্তু এরকম একনিষ্ঠ ও সর্বাঙ্গীন সৎ প্রয়াস লক্ষ্য করা যায় নি। এখানে দ্যাখা গেলো যে ছবির নির্মাতাগণ দর্শকদের কেবল প্রথম রিপুতাড়িত মাংসপিণ্ড মনে করেন না। কিংবা তাদের নিচুমানের বুদ্ধিবৃত্তির লঘুস্বভাব মানুষ বলেও গণ্য করা হয় নি। তাই সংক্ষিপ্ত বেশবাস সত্ত্বেও গ্রামের দরিদ্র তরুণীর প্রতি দর্শকদের স্বাভাবিক সম্ভ্রমবোধ নষ্ট হয় না। অথবা এই ছবি দেখতে দেখতে স্বজনক্ষমতাশূন্য মহাপণ্ডিতের ইন্টেলেকচুয়াল জ্যাঠামো সহ্য করার দরকার নেই। আমাদের স্বাভাবিক মানববৃত্তির ওপর এরকম আস্থাবান কোন ভদ্রলোক আমাদের দেশে এর আগে কখনো ছবি তৈরী করেন নি। আমাদের ওপর এই আস্থা স্থাপনের জন্য দর্শকদের পক্ষ থেকে তাঁদের সকৃতজ্ঞ ধন্যবাদ জানাই। Continue reading

স্মৃতিময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’ সমালোচনা

Surjo Dighal Bariসূর্য দীঘল বাড়ি ১৯৭৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর তারিখে মুক্তি পায়। ১৯৮০ সালের ১২ জানুয়ারী সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’য় স্মৃতিময় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম এই চলচ্চিত্রের সমালোচনা লিখেন। অনুপম হায়াৎ রচিত ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাস’ বই থেকে সমালোচনার অংশ বিশেষ বিএমডিবি-র পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল।

সূর্য দীঘল বাড়ি। আবু ইসহাক রচিত ছবি। জনচিত্রায়ন প্রযোজিত ছবি। শাওন-সাগর পরিবেশিত ছবি। সরকারী অনুদান মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম ছবি। মসিহউদ্দিন শাকের ও শেখ নেয়ামত আলী পরিচালিত ছবি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর মনন্তর পার হওয়া তদানীন্তন একটা দেশের একটা গাঁয়ের ছবি। যে ছবিতে সবুজ মাঠ ও কাঁশবন, নারকেল-কলা-তালগাছ, নৌকা ও কচুরীপানা, পুকুর ও জিলাবাঁধা বরশী হাঁস ও মুরগী, ব্যাঙ ও ঝিঝির ডাক, কিত্ কিত্ ও কাবাডি খেলা, ছাগল-গরু ও গোবর চড়কি মেলা ও ভেজা কাঁথা, হোকজোর টান ও রোদে বসে তেল মাখা, চালের চোরা কারবার ও চালের জন্য হাহাকার, হিজল তমালের সারি, ঘুঘু কোকিলের ডাকাডাকি, মসজিদে আজান ও সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত এবং সর্বোপরি মানুষ। গাঁয়ের শক্তিমান ও শক্তিহীন মানুষ! অত্যাচার ও অত্যাচারিত মানুষের হাহাকার! শতাব্দীর লাঞ্ছিত ইতিহাস, বাংলার গ্রামের ইতিকথা নকশী কাঁথার মতোই সূর্য দীঘলের সর্বাঙ্গে জড়ানো। এ ছবি নিকট দূরে অনুষ্ঠিতব্য বার্লিন কিংবা যে কোন প্রতিযোগিতা থেকে পুরস্কার ছিনিয়ে আনলে একটুও অবাক হবো না। কারণ বেদনার্ত মানুষের কথা সততার সঙ্গে বলেও সত্যজিৎ কান চিত্রোৎসব থেকে জয়ের মালা গ্রহণ করেছিলেন। Continue reading